হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির
অবস্থানঃ
জেলাঃ সিরাজগঞ্জ
উপজেলাঃ শাহজাদপুর
গ্রামঃ হাটিকুমরুল ইউনিয়নের নবরত্নপাড়া গ্রাম
ইতিহাসঃ
হাটিকুমরুলের নবরত্ন মন্দিরটি সিরাজগঞ্জ জেলার প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যাকে প্রথম দেখায় প্রায়ই দিনাজপুরের কান্তজিও মন্দির বলে মনে করাটাই স্বাভাবিক। এই নবরত্ন মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, তৎকালীন ভারত উপমহাদেশের সুরা বিহারের হিন্দু রাজা বিক্রম কেশরীর অধীনে ছিল এই এলাকার জমিদারিত্ব। নীরু বাবু ছিলেন এই জমিদারিত্বের দায়িত্বে, তিনি মূলত এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন। তবে এটি কে নির্মাণ করেছে, তার কোন সঠিক তথ্য জানা যায়নি। পরবর্তীতে সরকার হরিদাস নবরত্ন মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণ করেন। প্রাচীন এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি ১৩ শতক জায়গার উপর, দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। পোড়ামাটির ফলকের উপর ৯টি রত্ন বা চূড়া নির্মাণ করায় মধ্যযুগে গড়ে ওঠা এই মন্দিরটির নামকরণ করা হয় “নবরত্ন মন্দির”। উপরে উঠার জন্য ডান পাশে ছিল সিঁড়ি। উপরে রত্ন বা চূড়াগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ।
দীর্ঘ পাঁচশত বছরের পুরনো এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে মধ্যযুগ হতে এখনও কালের সাক্ষী হয়ে আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মন্দির নবরত্ন মন্দির। মন্দিরটির নাম তেমন শোনা যায় না বলে মন্দিরটি অজস্র লোকের কাছে আজও অচেনা। মন্দিরটি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব মুর্শিদকুলি খানের শাসনামলে ১৭০৪ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১৭২৮ খ্রিষ্টাব্দ সময়কালে (পাঠজাত বিবরণ থেকে জানা যায়) তিনতলা বিশিষ্ট কারুকার্যমন্ডিত মন্দিরটি উঁচু একটি বেদীর উপর চুন, সুরকি ও মসলা দ্বারা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রায় ১৫ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠা মন্দিরটির প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ১৫.৪ মিটার এবং প্রস্থ ১৩.২৫ মিটার। চারটি বারান্দা বিশিষ্ট একটি গর্ভগৃহ রয়েছে নিচতলার চারপাশে, প্রতিটি বারান্দার বাইরে ও ভিতরে রয়েছে সাতটি ও পাঁচটি খিলাল প্রবেশদ্বার। মন্দিরের দেয়ালে গড়ে তোলা পোড়ামাটির ফলক, লতাপাতা, ফুল-ফলের চিএ ও দেব-দেবীর মূর্তি খচিত ফলক সংস্কার ও কালের বির্বতনে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। এই মন্দিরের আশেপাশে ৩টি মন্দির রয়েছে। মন্দিরটির উওর-পূর্ব দিকে শিব-পার্বতী মন্দির, দক্ষিণ পাশে পুকুর পাড়ে পোড়ামাটির কারুকার্যে খচিত করা আছে আরকটি শিব মন্দির এবং জোড়া বাংলা মন্দির পশ্চিম পাশে রয়েছে। গর্ভগৃহের ভিতরের দিকে যাওয়ার জন্য পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে ২টি সুরঙ্গ প্রবেশ পথ রয়েছে।
মথুরার রাজা প্রাণনাথের প্রিয় বন্ধু ছিলেন জমিদার রামনাথ ভাদুরী। রাজা প্রাণনাথ কান্তজিও মন্দির নির্মাণ করার সময় আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়ে পড়েন, যার কারণে বাৎসরিক রাজস্ব সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে বিফল হয়। তখন রামনাথ ভাদুরী মথুরার রাজা প্রাণনাথের রাজস্ব পরিশোধ করেছিলেন। মথুরার রাজা প্রাণনাথ বন্ধুত্বের মান রাখার জন্য নিজের সংগৃহীত টাকা দিয়ে দিনাজপুরের কান্তজিও মন্দিরের মতই দেখতে সিরাজগঞ্জে নবরত্ন মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দিরটি নির্মাণে যে সকল ইট ব্যবহার করা হয়েছিলো সে সকল ইট ঘিতে ভেজে তারপর ব্যবহার করা হয়েছিলো বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়। এই মন্দিরটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ “ঐতিহাসিক স্থান” হিসেবে গ্রহণ করেন ১৯৮৭ সালে সংস্কার করেন। মন্দিরটি নবরত্ন মন্দিরের পাশাপাশি “দোলমঞ্চ” নামেও লোকজনের কাছে পরিচিত। মন্দিরটি যেমনভাবে নির্মিত করা হয়েছিলো, তার ফলসরূপ মন্দিরটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে যুগের পর যুগ আলো ছড়াচ্ছে।
জেলা শহর থেকে মন্দিরে পৌঁছানোর উপায়ঃ
সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মহাসড়কের পাশে রয়েছে হাটিকুমরুল বাস স্টেশন। সেই স্থান হতে কিছুটা দূরে রিকশা বা ভ্যানের মাধ্যমে গ্রামীণ মেঠো ঘোরানো পথ উওর-পূর্ব দিকে চলেছে। সেই দিকের এক কিলোমিটারের মতো সামনের দিকে এগিয়ে গেলে চোখে সামনে দেখতে পাওয়া যাবে স্থাপত্যে পোড়ামাটির কারুকার্যমন্ডিত প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন।

এগারো শিব মন্দির
এগারো শিব মন্দির অবস্থানঃজেলাঃ যশোরউপজেলাঃ অভয়নগরগ্রামঃ অভয়নগরইতিহাসঃপ্রতাপশালী যশোর রাজ্যের রাজা প্রতাপাদিত্য মুঘল শাসন আমলে মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত ও বন্দী

শ্রী শ্রী যশোরেশ্বরী কালী
শ্রী শ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দির অবস্থান: জেলাঃ সাতক্ষীরা উপজেলাঃ শ্যামনগর গ্রামঃ ঈশ্বরীপুর ইতিহাসঃ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি পবিত্র তীর্থস্থান হলো